এলজিইডির ল্যাব সহকারী পদে চাকরি করে কোটিপতি শামীম হোসেন। তার রয়েছে মানিকগঞ্জ শহরে বেউথা রিজার্ভ ট্যাকিংর পাশে একটি দুতলা বাড়ি। পৌরসভার বেউথা রোডে আরেকটি ৭তলা বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তবে নির্মাণাধীন ৭তলা ফ্ল্যাট আকারে বিক্রির জন্য তৈরি করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শামীম হোসেন প্রায় ২০ বছর আগে মাস্টার রোলে প্রতিদিন ৮৮ টাকা বেতনে ল্যাব সহকারী হিসেবে মানিকগঞ্জ এলজিইডিতে চাকরি নেন। তিনি এখনও মাস্টার রোলে একই পদে চাকরিতে বহাল আছেন। তিনি প্রতিদিন ৮৮ টাকা বেতনে যোগদান করার পর বর্তমানে তার বেতন প্রতিদিন ৫০০ টাকা হয়েছে। তার এই পদে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা নেই। এমনকি শুক্র এবং শনিবার ল্যাবে কাজ না করলে বেতন পান না তিনি। ডেইলি বেতনে ল্যাব সহকারী পদে চাকরি করে মানিকগঞ্জ শহরের বুকে ৬ শতাংশ জমির উপর গড়ে তুলেছে একটি দুইতলা ভবন। এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে একই এলাকায় ৭তলা ভবনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এলজিইডির ঠিকাদারদের কাছ থেকে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি কোটিপতি হয়েছেন।
শামীম হোসেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের রহদহ গ্রামের মৃত রাশেদ খানের ছেলে। তার বাবা পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। তিনি ৩ ভাই বোনের মধ্যে মেজো।
এলজিইডির এক কর্মকর্তা বলেন, শামীম মাস্টার রোলে ৫০০ টাকা বেতনে চাকরি করে কীভাবে শহরের মধ্যে দুটি বাড়ি করে।
শামীম হোসেনের গ্রামের বাড়ির লোকজন জানে তিনি এলজিইডিতে বড় পদে চাকরি করেন। তিনি বড় পদে চাকরি করেই মানিকগঞ্জ শহরে দুটি বাড়ি করেছেন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যায়, শামীম হোসেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেউথা রোডের পাশে একটি ৭তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করছেন। ভবনের ৬তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই করা হয়েছে। বেউথা রির্জাভ ট্যাংকির পাশেই তার রয়েছে একটি ২তলা বাড়ি। বাড়িটির নিচতলা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এবং দুইতলায় শামীম তার পরিবার নিয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে শামীম হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমি ছোট একটা দুইতলা বাড়ি করেছি। আর ৭তলা ভবনটি আমরা আত্মীয়স্বজন মিলে পার্টনারে করছি। তার এসব সম্পদের আয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এলজিইডিতে ১৫ হাজার টাকার মতো বেতন পাই। আমার একটি গ্রিল ওয়াকসফের দোকান আছে। এছাড়া আমার স্ত্রীর নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আছে। স্ত্রী কোথায় ঠিকাদারি করে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এলজিইডি, গণপূর্তে ঠিকাদারি করে বিভিন্ন ঠিকাদারের সঙ্গে পার্টনারে।
মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, শামীম ডেইলি বেতনে এলজিইডিতে চাকরি করেন। তিনি কাজ করলে বেতন পাবেন। তার সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা নেই। তিনি যদি অনৈতিকভাবে বাড়ি সম্পদের মালিক হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।